বস্তুবাদ কি সবকিছুর সমাধান? - Nas Distribution

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Wednesday, April 8, 2020

বস্তুবাদ কি সবকিছুর সমাধান?

বস্তুবাদ ও ভাববাদের বস্তুবাদ

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত ও আতংকের নাম করোনা ভাইরাস যা আমাদের অন্যভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। প্রত্যেকটি ঘর থেকে সমাজ, রাস্ট্র তথা সমগ্র বিশ্বের ঘুম হারাম ছোট্ট অথচ শক্তিশালী এই অনুজীবের তান্ডবে। এমন অবস্থায় কি সমাধান, কিভাবে মুক্তি এবং কবে এ নিয়েই আমাদের চিন্তা জল্পনা আর কল্পনা। বস্তুবাদী আমাদের চিন্তা এর বাইরে বের হতে পারেনা। বস্তুবাদী চিন্তা ধরেই নিয়েছে এ রোগের কারনেই তার মৃত্য হতে পারে এবং ভ্যাকসিন আবিস্কার না হলে এর থেকে নিস্তার নাই।
.
বস্তুবাদ বা Materialism হল যা দেখা যায়, যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ্য, উচ্চতা আছে তাই বিশ্বাস করা। অদৃশ্য বা গায়েব এখানে ঠাই নেই। এখানে সমস্যার সমাধানও বস্তু। বস্তু দিয়ে বস্তুর বিচার হয় এবং বস্তুই আদর্শ বা একক।
সুতরাং ভাইরাসের কারনেই এ রোগ হয়েছে এবং এ অথবা অন্য বস্তু দিয়েই সবাই বেচে যাবে এটাই এর দর্শন।
.
বস্তুবাদের বিপরীত হলো ভাববাদ। এই ভাববাদ আবার হরেকরকমে ভাগাভাগি হয়ে গেছে। তবে ভাববাদের সবাই আবার আত্মা বা souls বিষয়ে এক।  আত্মা সার্বজনীন।
কিন্তু ইসলামকে এই তালিকা থেকে বাদ দিলে দেখা যাবে এইসব ভাববাদ কোননা কোন ভাবে বস্তুবাদে গিয়ে মিলেছে। মুসলমানদের বিশ্বাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আল্লার হুকুম। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে তাবৎ সকল কর্মকাণ্ডই আল্লাহর হুকুমে চলছে। আর এই কারনে সৃষ্টি হয়েছে গতি, কোলাহল আর ছুটে চলা। অপরুপ সুন্দর করেছেন এই পৃথিবী এবং এর ভাজে ভাজে রেখেছেন মুগ্ধতা। মুগ্ধতা কেন বললাম তা পরে বলছি। 
.
বস্তুবাদী চিন্তা আমাদের সূক্ষ্মভাবে শিরকের (সৃষ্টিকর্তার সাথে শরিক করা) দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মৃত্যু ভয় থাকেনা এমন কোন মানুষ নেই এই তামাম পৃথিবীতে এবং সেটাই স্বাভাবিক।  কিন্তু করোনা ভাইরাসেই আপনার মৃত্যু হবে এমনটা কি নিশ্চিত? মানুষ যতই জানার চেস্টা করুক বিজ্ঞান পর্যন্ত স্বীকার করেছে মানুষ কখনোই সবকিছু জানতে পারবেনা। ব্রক্ষ্মান্ড এমনভাবে প্যাটার্ন করা হয়েছে যে এর যত জানা হবে ঠিক তত এর অধিক অজানা সামনে আসবে (এর জন্যই বলেছিলাম মুগ্ধতা)।  তাই বস্তুবাদীরা সবকিছু যুক্তি দিয়ে সমাধান খোজেই চলে। মূলত এটা আল্লাহর একপ্রকার শাস্তি। আল্লাহ কিতাবে বলেছেন তার সাথে যারা কৌশল করেন তিনিও তার সাথে কৌশল করেন এবং তিনিই সর্বোচ্চ কৌশলী।  তাই দুশ্চিন্তা, ভয়, হতাশা, যা কখনোই জানতে পারবেনা তার উত্তর খুজে চলা ইত্যাদি দিয়ে তিনি তাদের শাস্তি দান করেন। অন্যকোন ভাবে, এক্সিডেন্ট, শারীরিক অন্য যে কোন অসুখ অথবা কোন কারণ ছাড়াই মৃত্যু হতে পারে।  উপরিউক্ত কোন কারনে হলে এগুলো একেকটা উছিলা মাত্র। অথচ বস্তুবাদী চিন্তা এর গন্ডি থেকে বের হতে পারেনা। 
.
প্রিয় তাই মৃত্যু এত নিকটে সেটার ভয় যদি আমাদের সত্যিই থাকতো তাহলে কোন খারাপ কাজ আমি, আপনি করতে পারতাম না। মৃত্যু অবধারিত সত্য। তেমনি করোনা ভাইরাসের কারনে এমন হয়েছে সেটা ভাবাও ভুল। অন্যকোন ভাইরাস দিয়েও  আল্লাহ এমন শাস্তি দিতে পারতেন। এটাও একটা উছিলা মাত্র। আল্লাহর হুকুমে এমন হয়েছে যদি এর কোন শিফা থাকে সেটাও আল্লাহর হুকুমেই আবিস্কার করা হবে। শিফা আসতে পারে ভ্যাকসিন দিয়ে, ঔষধ দিয়ে বা যেকোনো জিনিস দিয়ে যা আল্লাহই ভালো জানেন।
মাঝখান দিয়ে আমাদের ঈমান চলে গেল, হালকা হল, শিরক হল, কুফরী হল (আল্লাহ আমাদের মাফ করুন - আমিন)
.
ঈমান চলে গেল এই কারনে যে রোগ হয়েছে ভাইরাসের কারনে এবং ভ্যাকসিন আমাকে আরোগ্য রাখতে পারবে ভাবার জন্য। উছিলার ভিতরে ঈমান চলে গেছে।
ঈমান হালকা হলো এই কারনে যে এটা আল্লাহর আজাব না ভেবে রোগবালাই মনে করার কারনে।
শিরক হলো এই কারনে যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছু সমাধান দিতে পারবে বলে ভাবার জন্যে।
কুফরী হলো এই কারনে যে,  আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়ার কারনে। 
.
প্রিয়ভাই ও বোনেরা শয়তান যেখানে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়না এবং জান্নাতে যাওয়ার আশা রাখে সেখানে আমাদের হতাশ হওয়া মূর্খতা ছাড়া আর কিছু নয় কি না আমি জানি না। 
মুসলমানদের হতাশ হওয়াটাই কুফরী। আমরা তো জানি ই আমাদের এই জীবন আজীবন থাকবে না। পরকালের বিশ্বাস যাদের আছে তাদের কাছে মৃত্যু একটা দেয়াল মাত্র। আমাদের জন্মের আগেই মৃত্যুর ফায়সালা করে ফেলা হয়েছে।
.
 ধারণা করা হয় সৃষ্টিকর্তার প্রথম সৃষ্টি ছিলো #কলম। আর কোরআন অবতীর্ণ হওয়ারপর প্রথম কথা ছিল #ইকরা মানে "পড়ুন" পড়ুন আপনার সৃষ্টিকর্তার নামে যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।
তারপর বলেছেন الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ
যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন,
(He Who taught (the use of) the pen)
(আল্লাহ মহান!!! ভাবলেই গায়ে কাটা দেয় আনন্দে কি মার্জিত ইসলাম!!!)
 কলম সৃষ্টির পর মহান রব কলমকে বললেন লেখো। তখন কলম লিখতে শুরু করলো। একে একে মানুষ সহ সকল কিছুর জন্ম, মৃত্যু এবং ভাগ্য লিখে ফেলা হলো। 
.
তাহলে ভাবুন একবার প্রিয়, আমাদের দুনিয়ার আসার আগেই এক্সপায়ারড বা মেয়াদ উত্তীর্নকাল লিখে দেওয়া হয়েছে। পূর্বে বলেছিলাম সুতরাং মৃত্যু নিয়ে হতাশা আর নয়। আল্লাহ যদি এই রোগে মৃত্যু রাখে তাহলে দুনিয়ার কোন ঔষধ বাচানোর ক্ষমতা নেই তাই যেন আমাদের ঈমানের সাথে মৃত্যু নসীহ হয়। আর আমাদের যদি শিফা থাকে তাহলে শীগ্রই আমার রব আমাদের হেফাজত করুন। মৃত্যু এবং জীবন দুটোই যেন আমাদের সম্মানজনক হয় ও নাজাতের কারণ হয় - আমিন।
.
প্রিয়...
এই লিখাটা এতক্ষণ ধৈর্য্য ধরে যিনি পড়েছেন তাকে, আমাকে এবং সবাইকে আল্লাহ বুঝ দান করুক ও ঈমান দান করুক আমিন। আমি এখানে আসলে আমার নিজের ঈমানী দূর্বলতাটাই এখানে লিখেছি কাউকে উদ্যেশ্য করে নয়। আমার নিজের পরিবর্তন সর্বাগ্রে চাই। 
তাই আল্লাহ যেন আমাদের বস্তুবাদী চিন্তা ও কথিত  ভাববাদী শিরকী চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়ে হৃদয়কে প্রশান্ত করে।

- আমিন

লিখা - খন্দকার নাঈম আবরার
(বস্তুবাদ কি সবকিছুর সমাধান?)

(বিঃদ্রঃ মানুষ মাত্রই ভুল। সকল ব্যাকরণগত ও অন্যন্য ভুল হয়ে থাকলে দুঃখিত)

No comments:

Post a Comment